স্বদেশ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টেও গ্রেনেড হামলার ঘটনা ছিল তারই ধারাবাহিকতা। সেই ষড়যন্ত্র এখনো চলছে।
আজ রোববার ভয়াল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট যখনই ক্ষমতায় এসেছে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের মদত দিয়ে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানোর অপচেষ্টা করেছে। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে সারাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। একের পর এক বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা চালিয়ে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা চালায়।
তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালায়। প্রকাশ্য দিবালোকে রাজনৈতিক সমাবেশে এ ধরনের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ নারকীয় হামলা ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচার করা ছিল সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো হত্যাকারীদের রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়।
হামলাকারীদের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। গুরুত্বপূর্ণ সব আলামত ধ্বংস করে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করে তারা ‘জজ মিয়া’ নাটক সাজায়। কিন্তু সত্য কখনো চাপা থাকেনি। পরে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তে বেরিয়ে আসে হাওয়া ভবন ও বিএনপি-জামায়াত জোটের অনেক কুশীলব এ হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত, বলেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০১৮ সালের অক্টোবরে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় হয়। আদালত গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে বিএনপি নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিদেশে পলাতক তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়েছে ১১ আসামির।
‘এই রায়ের মধ্য দিয়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আশা করি, সব আইনি বিধি-বিধান ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় রায় দ্রুত কার্যকর হবে। এই রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে দেশ থেকে হত্যা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের চির অবসান হবে, জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে এবং বাংলাদেশ আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ-শান্তিপূর্ণ আবাসভূমিতে পরিণত হবে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী। সূত্র : বাসস